সাগরের বুকে জেগে ওঠা পাথুরে বন!

প্রকাশঃ জুন ১৩, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম:

stone-forrest“শিলিন পাথুরে বন”।নামের সাথে মিল রেখেই যেন বনটার পুরোটা ভর্তি হয়ে আছে নানা রকমের বিশাল বিশাল পাথরে। চীনের শিলিন প্রদেশে অবস্থিত এই পাথুরে বনের খুব কাছেই আছে প্রাদেশিক রাজধানী কুনমিং। শুধু চীন নয়, শিলিন পাথুরে বনটি থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও বার্মাকেও ছুঁয়ে গেছে অনেকটা।

এখানে লম্বা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা চুনাপাথরের পাহাড় গুলোকে দূর থেকে দেখলে গাছের মতো লাগে বলেই এর নাম দেওয়া হয়েছে পাথুরে বন। ৩৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বনটির ভেতরে আরও রয়েছে লিজিজিং এর পাথুরে বন, নাইগু পাথুরে বন, ঝিয়ুন গুহা, ইউ খাল, চ্যাঙ খাল, ডেডি ঝর্ণা ও কুইফেঙ গুহা। পাথর গুলোও দেখতে এক রকম না। একেক পাথরের অবস্থান একেক রকম। কোনোটা চ্যাপ্টা, কোনোটা গোল, কোনো কোনোটা আবার বিচিত্র আকৃতির।

ধারণা করা হয়, পাথুরে এই বনটির বয়স প্রায় ২৭০ মিলিয়ন বছর। এর জন্ম নিয়ে বেশ কাল্পনিক একটা গল্পও রয়েছে। স্থানীয়দের মতে, অনেক কাল আগে ঠিক এখানেই আশিমা নামের এক মেয়ে বাস করত। ‘ই’ গোত্রের মেয়ে ছিল সে। একদিন একটা ছেলেকে খুব ভালো লাগল ওর। বিয়ে করতে চাইল ও সেই পছন্দের ছেলেটাকে। কিন্তু কেউ শুনল না ওর কথা। নিষেধ করে দিল ছেলেটার সঙ্গে মিশতে। সবার এমন আচরণে খুব কষ্ট পেল আশিমা। কষ্টে কষ্টে একটা সময় পাথর হয়ে গেল ও। আর সেই থেকে ওখানে জন্ম নিল আরও অনেক পাথর। তৈরী হল পাথুরে এ বন। এখনও সেখানে প্রতিবছর আশিমার জন্য তার গোত্রের মানুষেরা বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে “আলোর উৎসব” বা “টর্চ উৎসব” করে।

তবে এই  কাল্পনিক গল্পটা  বৈজ্ঞানিকদের মোটেই আকৃষ্ট করতে পারেনি। তারা ঠিকই একটা বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা বের করে ফেলেছেন। তাদের মতে, এখন যেখানে বনটি দাঁড়িয়ে আছে, কোটি কোটি বছর আগে সেখানে ছিল মস্ত বড় একটা সাগর। আর সেই সাগরের নীচেই ধীরে ধীরে চুনাপাথর জমা হয়েছে। একটা সময় কোনো এক আশ্চর্য কারণে সাগরকে ছাপিয়ে মাথা উঁচু করে উঠে আসে বনের পাথরগুলো। পাথরগুলোর কোনো কোনোটা কয়েক মিটারের হলেও এখানে এমন কিছু পাথর আছে, যেগুলো লম্বায় প্রায় ৪০ মিটার উঁচু।

বৈদ্যুতিক ট্রেনের মাধ্যমে পুরোটা বনকে খানিক সময়ের ভেতরেই দেখে শেষ করে ফেলা যায় খুব সহজেই। কিন্তু এর গায়ে লেগে থাকা হাজার বছরের গল্পগুলোকে জানতে হলে হাঁটতে হবে ওগুলোর কাছ দিয়েই। ২০০৭ সালেই ইউনেস্কো শিলিন পাথুরে বনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বা বিশ্ব ঐতিহ্যকেন্দ্র বলে ঘোষণা করে। এছাড়াও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও বেশ ভালো মানের বলে মনে করা হয় কোটি বছরের ঐতিহ্যবাহী এই পাথুরে বনকে।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
20G